কাস্টমারের মন জয় করার কিছু উপায়

আমরা প্রায় সবাই ব্যবসা পেশার সাথে পরিচিত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে হয়। একজন সফল ব্যবসায়ী হতে হলে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়। মূলত কৌশল অবলম্বন করে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে হয়।

একজন ব্যবসায়ীকে সব সময় চ্যালেঞ্জিং মনোভাবাপন্ন হতে হয়। কারণ প্রতিদিন প্রতিনিয়ত সবকিছুর পরিবর্তন ঘটছে। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসা করতে না পারলে আপনি কখনোই সফল হবেন না।

আপনার ব্যবসার সিক্রেট এডস প্ল্যান পেতে এখানে ক্লিক করুন

আর ব্যবসা এর মূল লক্ষ্য হলো গ্রাহকের মন জয় করা। আপনি যদি মানসম্মত সার্ভিস দিয়ে ভোক্তা বা গ্রাহকের মন জয় করতে পারেন তবে আপনি সফল হবেন। প্রতিটি ব্যবসায়ীর ভোক্তার মন জয় করাটাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। আপনি যত বেশি ভোক্তাকে আকর্ষিত করতে পারবেন তত বেশি লাভবান হবেন। ভোক্তার মন জয় করার জন্য সদ্ব্যবহার করা , মিষ্টভাষী হওয়া, মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা ইত্যাদি দিকগুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন। এগুলো যদি আপনি ধারাবাহিকভাবে ভোক্তাদের কে প্রদান করতে পারেন তবে আপনি সফল হবেনই।

আজকে আমরা আলোচনা করব কাস্টমারের মন জয় করার কিছু উপায় নিয়ে। ‌ এ সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমাদের লেখা টি সম্পূর্ণ পড়বেন। তো চলুন জানা যাক কাস্টমারের মন জয় করার কিছু উপায় সম্পর্কে।

কাস্টমারদের মন জয় করা আসলে কি সে সম্পর্কে জানুন-

মূলত একটি ব্যবসায়ের প্রধান লক্ষ্য হলো কাস্টমার ধরে রাখা। আপনি ভালো মানসম্মত পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে এবং কাস্টমারদের সাথে সদ্ব্যবহার করে কাস্টমারের মন জয় করতে পারবেন।

কাস্টমার যত বেশি আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আকর্ষিত হবে আপনার প্রতিষ্ঠান ততো বেশি উন্নতি করবে। ‌ভোক্তাদের চাহিদাটা যদি আপনি মেটাতে পারেন তবেই আপনি সার্থক।

কাস্টমার কোন ধরনের পণ্য চায় বা কিভাবে কাস্টমারদের সাথে কথা বললে তারা বেশি খুশি হবে এসব দিকগুলো বিবেচনা করে আপনাকে কাস্টমারদের মন জয় করতে হবে।

কাস্টমারদের মন জয় করার উপায় সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল:

১। পরিবেশ বান্ধব:

আপনি যদি আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কে সফল করতে চান তবে আপনাকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে হবে। কোন পরিবেশে ভোক্তার সাথে কোন ধরনের আলাপ করলে ভোক্তা খুশি হবে সেসব সম্পর্কে আপনাকে সজাগ থাকতে হবে। অনেক সময় বক্তারা পণ্য ক্রয়ের সময় বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখিন হতে পারে।

আপনি যদি তখন তাদেরকে সঠিক সেবা প্রদান করেন তবে ভোক্তা অনেক খুশি হবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন ভোক্তার প্রতিকূল পরিবেশের সময় আপনি যদি তাকে সাহায্য করেন তবে অবশ্যই ভোক্তা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

এছাড়াও আপনি যদি পরিবেশবান্ধব সামগ্রী সঠিক সময়ে ভোক্তার কাছে তুলে ধরতে পারেন তবে ভক্ত আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতি আগ্রহী হবে।

মূলত সময় এবং পরিবেশের সাথে মিল রেখে যদি আপনি পণ্য সরবরাহ করতে পারেন তবে সেটাই হবে পরিবেশবান্ধব ব্যবসায় সেবা।

২। কঠোর প্রচেষ্টা:

আপনি যে সব সময় আপনার ভোক্তার মন জয় করতে পারবেন এমনটা নাও হতে পারে। মানুষের মন জয় করা অনেক কষ্টসাধ্য কাজ। ফলে আপনাকে কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে সে গুলোকে সামাল দিতে হবে। ‌

ভোক্তার মন জয় করার জন্য আপনাকে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে এবং আপনি ভোক্তাকে যে সেবা প্রদান করবেন সেটার প্রতি দায়িত্বশীল এবং সৎ থাকতে হবে।
ফলে আপনাকে অবশ্যই এ বিষয়গুলোর প্রতি কঠোর হতে হবে।

৩। সঠিক বাচনভঙ্গি:

ভোক্তার সাথে কথা বলা বা বাচনভঙ্গি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভোক্তার মন জয় করার জন্য। আপনি সঠিক বাচনভঙ্গি বা মুখভঙ্গির মাধ্যমে ভোক্তার মন জয় করতে সক্ষম হবেন। কারণ আপনার সঠিক বাচনভঙ্গির ওপর বিশ্বাস করেই হোক তা আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয় করবে। সেই ক্ষেত্রে আপনার বাচনভঙ্গি যদি সঠিক হয় তবে পুনরায় আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভোক্তা আসবে এটা নিশ্চিত।

সব সময় যে আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য ভোক্তার পছন্দ হবে এমনটা নয়। কিন্তু আপনি আপনার সুন্দর কথার মাধ্যমে  মন জয় করে , তাকে পণ্য সম্পর্কে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন অনায়াসে। তাই এই ক্ষেত্রে সঠিক বাচনভঙ্গি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৪। সাবলীল দৃষ্টিভঙ্গি:

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ভোক্তার নিকট পণ্য বিক্রয়ের জন্য দৃষ্টিভঙ্গির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি এমন ভাবে ভোক্তার সাথে কথা বলবেন যেন ভোক্তা আপনার কথার ওপর বিশ্বাস করে পণ্য ক্রয় আগ্রহী হয়। এজন্য যিনি পণ্য বিক্রয়ের জন্য ভোক্তার সাথে কথা বলবেন তাকে অবশ্যই মিষ্টভাষী হতে হবে এবং দর্শনধারী হতে হবে সাথে সুন্দর ভাবে বোঝানোর ক্ষমতা থাকতে হবে।

আপনি যদি কোনো পণ্য সম্পর্কে ভোক্তাকে সুন্দর ভাবে বোঝাতে পারেন তবে ভোক্তা আপনার পণ্য ক্রয়ের জন্য আগ্রহী হবে। ভোক্তার প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় সাবলীল রাখার চেষ্টা করবেন। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি এমন থাকতে হবে যেন আপনাকে দেখা মাত্রই আপনার প্রতি বিশ্বাস তৈরি হয় ভোক্তার। তাই সাবলীল দৃষ্টিভঙ্গি এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।

৫। গোছালো পরিবেশ:

কাস্টমার বা ভোক্তার মন জয় করার জন্য আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং গোছালো রাখার চেষ্টা করবেন। আপনি যত বেশি গোছালো হবেন কাস্টমার ততবেশি আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আকর্ষিত হবে। আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ যদি সুন্দরভাবে গোছানো থাকে তবে  কাস্টমার আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আকর্ষিত হবে। 

মূলত একজন কাস্টোমার আপনার প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ দেখেই পণ্য ক্রয়ে আগ্রহী হবে। যদি আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ কাস্টমারের মন জয় করতে পারে তবে আপনি সফল হবেন।

৬। সৎ এবং নিষ্ঠাবান:

একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান প্রতি কাস্টমারদের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য অবশ্যই একজন ব্যবসায়ীকে সৎ এবং নিষ্ঠাবান হতে হবে। একজন সৎ এবং নিষ্ঠাবান ব্যবসায়ী সবসময় কাস্টমারের মন জয় করতে সক্ষম। সর্বদা সত্য বলার মধ্য দিয়ে আপনি যদি কাস্টমার এর নিকট পণ্য বিক্রয় করেন তবে তারা খুশি হন। সাথে সাথে আপনার প্রতি তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।

একটা কথা জেনে রাখা ভালো যে কাস্টমার যত বেশি আপনাকে বিশ্বাস করবে আপনি তত বেশি তার মন জয় করতে পারবেন। কারণ কাস্টমার আপনার কথার উপর বিশ্বাস করে তার পছন্দের পণ্য ক্রয় করবে।

প্রতিশ্রুতিশীল মনোভাব:

ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতিশীল মানুষ হতে হবে। কাস্টমাররা অনেক সময় পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান এবং গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি সম্পর্কে জানতে চায়। আপনি তাদেরকে সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যদি প্রতিশ্রুতিশীল হয়ে পণ্য বিক্রয় করেন তবে আপনি কাস্টমারের মন জয় করতে পারবেন।

অনেক সময় ব্যবসায়ীরা কাস্টমারকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে যে, কোন পণ্যের কোন ধরনের সমস্যা থাকলে সেটি তারা পুনরায় পরিবর্তন করে দিবে । তাহলে এক্ষেত্রে আপনি কাস্টমারের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পরবর্তীতে ওই কাস্টমার পণ্য নিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে আপনি যদি তাকে সমাধান করে দেন তবে আপনি কাস্টমারের মন জয় করে নিলেন।

৭। উন্নত মানের সেবা প্রদান:

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আপনাকে উন্নত মানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে কাস্টমারের মন জয় করতে হবে। বর্তমান সময়ে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় মাধ্যম দ্বারাই কাস্টমারকে পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে কাস্টমারের মন জয় করতে পারবেন সহজে। তবে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে অবশ্যই গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করতে হবে।

শেষ কথা:

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বুঝতেই পারছেন যে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনার জন্য কি ধরনের নীতিমালা প্রয়োগ করতে হয়। সব সময় মনে রাখা ভাল যে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান প্রধান লক্ষ্য কাস্টমারকে ধরে রাখা।

উপরিউক্ত আলোচনায় আপনি কিভাবে কাস্টমারকে ধরে রাখবেন সেসব সম্পর্কে যে কৌশলগুলো বলা হয়েছে, সেগুলো আপনি আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন। এই সমস্ত কৌশল অবলম্বন করলে আপনি অবশ্যই আপনার কাস্টমারের মন জয় করতে সক্ষম হবেন। সাথে সাথে আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মান বাড়াতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

popular post