ছোট ব্যবসার জন্য ব্র্যান্ডিং এর সেরা ১০টি টিপস

Branding

ব্র্যান্ডিং এ যেমন বড় কোম্পানি গুলো আরো বড় হয় তেমনি ছোট কোম্পানি গুলোর ও নিজের পরিচয় তুলে ধরার জন্য ব্র্যান্ডিং প্রয়োজন। আজ আমি আলোচনা কিভাবে আপনি আপনার কোম্পানির ব্র্যান্ড ডেভেলপ করবেন।

বিস্ময়কর ভাবে সত্য যে বাংলাদেশের প্রায় ৯৯% ছোট কোম্পানি ব্র্যান্ডিং নিয়ে তেমন চিন্তিত নয়। কিন্তু যারা লং টার্ম বিজনেস করার চিন্তা করছেন তারা কিছুটা হলেও ব্র্যান্ডিং এর গুরুত্ব বুঝেন। সফল বিজনেস ম্যানরা বুঝতে পারেন যে ব্যবসা এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং এর একটা যোগসূত্র আছে। ব্র্যান্ডিং শুধু মাত্র একটি লোগো বা ব্যবসার ধরন মানুষের মাঝে পরিচিত করে না বরং আপনার প্রডাক্ট বা সার্ভিস এর প্রতি আপনার কাস্টমার বা ক্লায়েন্টদের আস্থাও তৈরি করে দেয়।

এখানে কিভাবে আপনি সফলভাবে আপনার ব্যবসার জন্য ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়ন করতে পারেন তার উপর দশটি টিপস আছে। মনোযোগ সহকারে পড়ুন এই ১০ টি পয়েন্ট।

১। আপনার ব্র্যান্ড কে সংজ্ঞায়িত করুনঃ

মার্কেট রিসার্চ করুন এবং আপনার কাস্টমার বা ক্লায়েন্ট এর চাহিদা সম্পর্কে খুব ভাল করে ধারনা নিন। তারপর আপনি আপনার প্রডাক্ট বা সার্ভিস দিয়ে কিভাবে বাজারে আপনি পার্থক্য তৈরি করতে পারেন তা ঠিক করুন।

২। ব্র্যান্ড ডেভলপকে ব্যাক্তি হিসাবে চিন্তা করুনঃ

প্রত্যেকটা মানুষের ডিফারেন্ট চরিত্র, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং উদ্দেশ্য আছে যা দিয়ে তাকে চেনা যায়। আমাদের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় কিভাবে আমরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে কিভাবে উপস্থাপন করি, কিভাবে আমরা কথা বলি, কিভাবে আমরা পোশাক পরি। ঠিক তেমনি যখন ব্র্যান্ড ডেভেলপ করবেন তখন আপনার কোম্পানির জন্য এই বিষয় গুলো বোঝা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৩। আপনার বিজনেসের গতিশীলতা কার উপর নিরবপুরন।

আপনাকে সবার আগে বুঝতে হবে আপনার কোন প্রডাক্ট বা সার্ভিস আপনার কোম্পানির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রডাক্ট বা সার্ভিস ই আপনার কোম্পানির ব্র্যান্ড ডেভেলপ এ মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

৪। গ্রাহকদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তুলুনঃ

চাকচিক্য প্যাকেট কিংবা খুব বড় অফার দিয়ে কাস্টমারের এক্সপেক্টেশন হাই করলেন কিন্তা তা যদি দিতে না পারেন তবে আপনার সাথে কাস্টমারের সম্পর্ক খারাপ হবে। সত্য তথ্য দিয়ে আপনি আপনার কাস্টমারের বিশ্বাস অর্জন করুন। আপনি সব সময় লং টার্ম রিলেশনে যাবেন কাস্টমারের সাথে। আপনি কি সেল করছেন, কাস্টমার কেনই বা আপনার থেকে সেটি নিচ্ছে তা ক্লিয়ার থাকতে হবে।

৫। কাস্টমারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কথা বলুনঃ

টু দা পয়েন্টে কথা বলবেন। কাস্টমার যেই সার্ভিস কিংবা প্রডাক্ট সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তার সাথে ঐ বিষয় নিয়েই কথা বলুন। এতে কাস্টমার খুব ভাল ভাবেই বুঝবে তার কি ধরনের সেবা আপনি সার্ভ করতে পারবেন।

৬। বহুবার একই ভাবে একই বার্তা পুনরাবৃত্তি করবেন নাঃ

চেস্টা করবেন আপনার বার্তাটিকে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করতে।

৭। বড় ব্র্যান্ড গুলোকে অনুকরন করবেন নাঃ

চেষ্টা করুন আপনার নিজের স্বাতন্ত্র্যসূচক পরিচয় খুঁজে দেখতে। বড় কোম্পানি গুলো অলরেডি একটা বাজার দখল করে আছে। কিন্তু তাদের কিছু কাস্টমার আছে যারা তাদের সার্ভিস কিংবা প্রডাক্ট থেকে আরো ইউনিক অথবা আরো ভাল সার্ভিস খুজছে। তাই তাদের কে টার্গেট করে আপনি আকৃষ্ট করার জন্য উপায় খুজুন। তাদেরকে আসল/ খাঁটি সার্ভিস দিন। তারাই আপনার ব্র্যান্ড ডেভেলপে সাহায্য করবে।

৮। উদ্ভাবনী এবং সাহসী হোনঃ

আপনার বিশ্বাসের উপর আস্থা রাখুন। বড় ব্র্যান্ড গুলো আমলাতন্ত্রের বড় স্তর থাকে তাই তাদের কাস্টমারদের চাহিদার চেঞ্জ হলেও তারা নমনীয় হয় না। তাদের ডিসিসন মেকারা খুবই কঠোর থাকেন তাদের ব্র্যান্ড নিয়ে।

৯। সর্বদা যখন গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন আপনার ব্র্যান্ডিং বিবেচনা করবেনঃ

আপনার গর্ব হারানো কিংবা নির্বিচার হয়ে যাওয়ার ভয় আপনার ব্র্যান্ডিং পজিশনিং মিশিয়ে ফেলবেন না। দাম কমানোর চেয়ে যতটা পারুন অফার দিন। বিজ্ঞাপন দিয়ে ও আপনার হারানো ব্র্যান্ডিং ফিরিয়ে আনা যাবে।

১০। সব কিছুর উপর আপনার লোগো দিলেই ব্র্যান্ডীং হবে না:

ভবিষ্যতের কাস্টমার বা গ্রাহক রা অনেক বেশি সচেতন। তাই তাদের বুদ্ধিমত্তা কে সম্মান করুন। তাদেরকে আপনার কোম্পানির অ্যাম্বাসেডর করুন। এক একটা কাস্টমার আপনার হয়ে কথা বলবে। 

লিখেছেন: মেফতাহুল আমিন